বৃদ্ধ খুনের ঘটনায় বিজেপি নেতা সহ ধৃত ৩ : ভোটের মুখে অস্বস্তিতে পদ্ম শিবির

20th March 2021 8:11 am বর্ধমান
বৃদ্ধ খুনের ঘটনায় বিজেপি নেতা সহ ধৃত ৩ : ভোটের মুখে অস্বস্তিতে পদ্ম শিবির


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) :  টাকা লুঠের জন্য বাড়িতে ঢুকে নৃশংস ভাবে বৃদ্ধকে খুনের ঘটনায় এক বিজেপি নেতা ও তাঁর দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করলো পুলিশ ।  ধৃতরা হল জয়ন্ত সাঁতরা , সিরাজউদ্দিন মণ্ডল ওরফে টগর শেখ ও গৌতম মণ্ডল । বর্ধমানের 
বেলকাশে বাড়ি জয়ন্তর । সিরাজউদ্দিন সরাইটিকর এবং গৌতম বেচারহাট এলকার  বাসিন্দা। ধৃত জয়ন্ত বর্ধমান উত্তর বিধানসভার  ২৭ নম্বর জেলা পরিষদের বিজেপির ‘শক্তিকেন্দ্র প্রমুখ’। পুলিশের দাবি  রায়নার পোস্ট অফিস পাড়া নিবাসী বৃদ্ধ জীবন কানাই সেনগুপ্তকে এই তিনজনই পরিকল্পনা করে নৃশংস ভাবে খুনের করেছে । শুক্রবার বিকালে পুলিশ তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করেছে। শনিবার তিন ধৃতকে বর্ধমান আদালতে পেশ করে পুলিশ হেপাজতে  নেওয়ার আবেদন জানাতে পারে বলে খবর । অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন মৃতর পরিবার পরিজন । এদিকে ভোটের মুখে এই ঘটনায় বিজেপি নেতার নাম  জড়ানোয় ব্যাপক চাঞ্চল্য চড়িয়ে পড়েছে  জেলার রাজনৈতিক মহলে। পুলিশ জানিয়েছে ,গত ৯ মার্চ সন্ধ্যায় রায়নার পোস্টঅফিস পাড়ার বাড়িতে নৃশংস ভাবে খুন হন বৃদ্ধ জীবন কানাই সেনগুপ্ত ।খুনের ঘটনার  পরেই জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশে এসডিপিও ( বর্ধমান দক্ষিন) আমিনুল ইসলাম খানের নির্দেশে বিশেষ টিম গঠন করে তদন্তে নামেন । ঘটনার ৯ দিনের মাথায় খুনের ঘটনায় জড়িতদের  খোঁজ পুলিশ পেয়ে যায় । মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর থেকে সিরাজউদ্দিনকে, বাকি দু’জনকে বর্ধমান থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে । গ্রেপ্তারের পর ধৃতরা জেরায় খুনের ঘটনা ঘটানোর কথা কবুল করেছে বলে পুলিশের দাবি ।ধৃতদের মধ্যে গৌতম ও সিরাজের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় নানা অপরাধ মূলক কাজে জড়িত থাকার  অভিযোগ রয়েছে । এসডিপিও জানিয়েছেন  “ফোন-সহ বিভিন্ন সূত্র ধরে খুনে জড়িতদের কাছে পৌঁছানো যায় ।“ ধৃতদের মধ্যে সিরাজের শাশুড়ি নিহতের বাড়িতে আয়ার কাজ করতো। তার কাছ থেকেই ধৃতরা জানতে পারে রায়না পোস্ট অফিসপাড়ার একটি বাড়িতে  শুধু তিনজন বৃদ্ধবৃদ্ধা থাকেন।সেই বৃদ্ধর ঘরের আলমারিতে কয়েক লক্ষ টাকা রয়েছে। এমনটা শোনার  পর থেকেই  কি ভাবে ওই টাকা লুট করা যায় তার পরিকল্পনা সিরাজ শুরু করে। বন্ধু গৌতমও সিরাজের সঙ্গে সেই পরিকল্পনাতে যোগ দেয় । ঘটনা ঘটানোর আগে তাঁরা এলাকায়  ‘রেইকি’ করে যায় । খুনের  ঘটনার দিন জয়ন্তকে সঙ্গে নিয়ে গৌতমের মোটরবাইকে চড়ে  তিনজন রায়না বাজারে আসে। বৃদ্ধর বাড়ির কিছুটা দূরে মোটরবাইক রেখে তাঁরা পাঁচিল টপকে বৃদ্ধর বাড়ির ভিতরে ঢোকে। বৃদ্ধ জবন কানাই বাবু তখন ঘরের একটি চেয়ারে বসে টিভি দেখছিলেন। তিন যুবকে দেখে বৃদ্ধ চিৎকার শুরু করে দিলে যুবকরা বন্দুক দেখিয়ে তার মুখ চিপে ধরে বৃদ্ধকে ভয় দেখানোর সময়েই দুর্ঘটনা ঘটেযায় । জয়ন্ত সাঁতরাকে গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গে জেলা বিজেপি যুব নেতা শ্যামল রায় অবশ্য বলেন, “ভোটের মুখে সুযোগ বুঝে  মিথ্যা মামলায় আমাদের নেতাকে ফাঁসানো হয়েছে।“

    





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।